অনলাইনে সংবাদ জনপ্রিয় করবেন যেভাবে

অনলাইন ডেস্ক :
বর্তমানে সারা বিশ্বের বিভিন্ন শ্রেণির পাঠক তার প্রয়োজনীয় তথ্যের সন্ধানে গুগলে সার্চ করে। গুগল তখন তার সার্চ রেজাল্ট পেজে অনেকগুলো ওয়েবসাইটের ফলাফল প্রদর্শন করে। কোনটি প্রথমে কোন ওয়েবসাইটের নাম হয়ত প্রদর্শন করে পরের পেজে।

এসইও (SEO)হচ্ছে একটি ওয়েবপেজকে র‌্যাংক করানোর পদ্ধতি। একটি ওয়েবপেজকে সার্চ ইঞ্জিনে এক বা একাধিক কীওয়ার্ড দ্বারা র‌্যাংক করানো হয়। একটি নিউজকে সার্চ রেজাল্টে সবার আগে আনতে এসইও বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

এসইও ফ্রেন্ডলি নিউজ রিপোর্টিং নিয়ে আজকের আলোচনা:

সংবাদ কী?

যা নতুন এবং মানুষ যা জানতে চায় তাই সংবাদ।

তিন ধরনের সংবাদ মাধ্যম রয়েছে:

০১) প্রিন্ট মিডিয়া

০২) ব্রডকাস্ট মিডিয়া

০৩) অনলাইন মিডিয়া (ইন্টারনেট)

অনলাইন নিউজ মিডিয়া কী?

অনলাইন নিউজ মিডিয়া একটি সংবাদপত্রের অনলাইন সংস্করণ। সংবাদ মাধ্যম বা সংবাদ শিল্প গণমাধ্যমের রূপ, যা সাধারণ জনগণের কাছে খবর পৌঁছে দেওয়ার বা লক্ষ্যবস্তুতে প্রকাশ করার ওপর মনোনিবেশ করে।

ডিজিটাল বা অনলাইন সাংবাদিকতা কী?

ডিজিটাল সাংবাদিকতা অনলাইন সাংবাদিকতা নামেও পরিচিত, যেখানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোনো সংবাদকে খুব দ্রুত সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া যায়। অনলাইন সাংবাদিকতা একটি ইন্টারেক্টিভ প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে খুব সহজেই পাঠকের মতামত জানা ও পাঠককে নিজের মতামত জানানো যায়।

যেভাবে এসইও ফ্রেন্ডলি প্রতিবেদন লিখবেন-

একটি সংবাদ প্রতিবেদন একটি গল্পের মৌলিক ঘটনা যা বর্তমানে ঘটছে, যা ঘটেছে বা এখন তা চলমান।

প্রতিবেদন লেখার সময় যেসব বিষয়গুলোকে লক্ষ্য রাখতে হবে-

শিরোনাম: একটি নিউজের শিরোনাম দেখে পাঠক চিন্তা করে নিউজটি কি পড়বে নাকি পড়বে না। পাঠকের চিন্তাশক্তি ও রুচিবোধ মাথায় রেখে নিউজের শিরোনাম ঠিক করতে হয়। বরাবরের মতই অনলাইনের নিউজের শিরোনামে একটু ভিন্নতা থাকে। অনলাইনে প্রিন্ট মিডিয়ার কথা চিন্তা করে কাজ করা যাবে না।

– শিরোনাম হতে হবে আকর্ষণীয়। যেমন-

১) ‘বরিশাল নগরীতে ভোররাতে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে’

২) ‘বরিশালে ভোররাতে ফিল্মি স্টাইলে ছিনতাই’

এই দুটির শিরোনামের মধ্যে কোনটি ভালো লেগেছে? নিশ্চয়ই দ্বিতীয়টি।

লক্ষ্য করুন- দ্বিতীয় শিরোনামে একটা শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে ‘ফিল্মি স্টাইলে’।

– শিরোনামে সর্বোচ্চ ৮টির বেশি শব্দ ব্যবহার না করা ভালো।

– পাঠককে কোনভাবেই বিভ্রান্ত করা যাবে না। স্থানের নাম উল্লেখ করে দিলে পাঠক বিভ্রান্ত হবে না।

– গতানুগতিক শিরোনাম না দিয়ে নিউজের ভিতর থেকে মূল বাক্যটি শিরোনামে আসতে পারে।

কীওয়ার্ড: কীওয়ার্ড হল শব্দ গুচ্ছ যা দিয়ে আপনি বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে (গুগল, বিং, ইয়াহু, আস্ক ইত্যাদি) আপনার তথ্য খুজতে ব্যবহার করে থাকেন। শিরোনামে ফোকাস কীওয়ার্ডটি ব্যবহার করলে সার্চ ইঞ্জিনে আপনার পোস্টটি রেঙ্ক করতে সাহায্য করবে।

ছবি ব্যবহার:

– ছবির রেজুলেশন ভালো হতে হবে।

– ঘটনার সাথে সম্পর্কিত ছবি ব্যবহার করতে হবে। ছবি ছাড়া কোন নিউজ পাবলিশ করা যাবে না।

– ছবির সাইজ ঠিক রাখতে হবে।

– রক্তমাখা, মৃত মানুষের ছবি ব্লার (অস্পষ্ট) করে দিতে হবে। (রক্তের অংশ, মৃত মানুষের চেহারা ব্লার)

– ছবি যদি ইন্টারনেট থেকে নেয়া হয় তাহলে ক্যাপশন লিখে ছবির সোর্স উল্লেখ করতে হবে।

– নিজের তৈরি করা ছবিগুলোতে লোগো ইউজ করা যেতে পারে।

– ঘটনার সাথে সম্পর্কিত ভিডিও কিংবা অডিও থাকলে তা শেয়ার করতে হবে। ভিডিও শেয়ারিং সাইট হিসেবে ইউটিউব এবং অডিও শেয়ারিং সাইট হিসেবে সাউন্ড ক্লাউড কে বেছে নিতে পারেন।

– পরীক্ষার রেজাল্ট অথবা পিডিএফ ফাইল গুগল ড্রাইভে রেখে শেয়ার করতে পারেন।

বডি কন্টেন্ট:

– যাকে বা যেই বিষয় নিয়ে রিপোর্ট লিখবেন সেই ব্যক্তির নাম কিংবা সেই বিষয়ের নামটা প্রথম প্যারাতে রাখতে হবে।

– আমি যদি মমিনুলকে নিয়ে একটা রিপোর্ট লিখি ৫০০ শব্দের। এখানে মমিনুলের নাম আসতে পারে ৩ থেকে ৪ বার এর বেশি আনা উচিত না।

– খুব সহজ ও সাবলীল ভাষায় প্রতিবেদন লিখুন।

– এক প্যারাতে ২ থেকে ৩টি লাইন লিখুন।

– লেখার ভাষা হবে স্পষ্ট, সংক্ষিপ্ত, এবং সক্রিয়।

– অপ্রয়োজনীয় শব্দের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।

– একই কথা বারবার রিপিট করা যাবে না।

– প্রতিবেদনটি খুব ছোট কিংবা খুব বড় করবেন না , যাতে কমপক্ষে ৩০০ থেকে ৫০০ শব্দ থাকে।

– প্রতিবেদনটির সত্যতা প্রমাণের জন্য স্থানীয় পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, প্রতিবেদন সম্পর্কিত ব্যক্তির সাক্ষাৎকার দিলে ভালো হয়।

– লেখার বানান ভুল করা উচিত না।

– প্যাসিভ ভয়েস ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। যেমন: আমি ভাত খাই (একটিভ), আমার দ্বারা ভাত খাওয়া হয় (প্যাসিভ)।

– বডিতে একটা কন্টেন্টের সাথে আরেকটা কন্টেন্ট লিঙ্ক করে দিলে এসইও ফ্রেন্ডলি হয়।

– গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সাব হেড দিয়ে দিয়ে করতে পারেন। তাহলে এটা আরও ইউজার ফ্রেন্ডলি হবে।

গুগল এনালাইটিক্স:

গুগল এনালাইটিক্স টুলস গুগলের একটি ফ্রি সেবা। যার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন-

– ভিজিটরের রিয়েলটাইম রিপোর্ট

– ভিজিটরের অবস্থানকাল

– ভিজিটরের সংখ্যা

– রেফারেল সাইটের লিস্ট

– সার্চ ইঞ্জিনের থেকে ভিজিটরের সংখ্যা

– ওয়েবসাইটের বাউন্সরেট

– তুলনামূলক রিপোর্ট

– সোশ্যাল মিডিয়া (ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস, লিঙ্কডিন ইত্যাদি) থেকে ভিজিটরের সংখ্যা ইত্যাদি।

গুগল এনালাইটিক্স টুলসের সাহায্য নিয়ে খুব সহজেই আপনি আপনার টার্গেট সেট করতে পারবেন।

টিপস:

– এইমাত্র পাওয়া, ব্রেকিং নিউজ সঙ্গে সঙ্গে দিতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়।

– আপনার লেখা কন্টেন্ট আপনি আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে শেয়ার করতে পারেন, বন্ধুদেরকে মেসেঞ্জারে শেয়ার করতে পারেন। এতে সাইটের ভিজিটর বাড়বে।

– মানবিক, অনুসন্ধান ও তথ্যবহুল ধরনের নিউজগুলো বেশি হিট করে।

সতর্কতা:

১) অন্য সাইট থেকে কোন কনটেন্ট চুরি কিংবা কপি করা যাবে না।

২) যদি কপি করতে হয় তাহলে ওই সাইটের মালিকের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে। (সূত্র : দৈনিক যুগান্তর)