জন্মনবন্ধন সংশোধনে হয়রানি হওয়া উচিত নয়

সম্পাদকীয়
জন্মনিবন্ধনে ভুল! এই ভুল থাকা স্বাভাবিক বলা চলে! তবে এই ভুলটা সবচেয়ে বেশি করে থাকেন দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে হুড়োহুড়ি করতে গিয়ে তারা ভুল করে ফেলেন বেশি। অপরদিকে সাধারণ মানুষও অজ্ঞতার কারণে ভুল করে বসেন। যেমন-কারো নাম মোহাম্মদ আবদুল আলি। হয়তো তার ডাক নাম আলি হোসেন। এক্ষেত্রে তার বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নাম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে গ্রামের মানুষরা এ ধরনের ভুলগুলোকে শুরুতে তেমন একটা আমলে নেননা। কিন্তু পরবর্তীতে যখন প্রয়োজন হয়, তখন নাম সংশোধনের ছুটোছুটি করতে এদিকসেদিক। এভাবে তারা অনেক জটিলতার মধ্যে জড়িয়ে যান।

প্রিয় সময়ে প্রকাশিত ‘জন্ম নিবন্ধন সংশোধনে অনেক হয়রানি হচ্ছে: মন্ত্রী’ সংবাদটির মাধ্যমে পাঠ মাত্রই অবগত হয়েছেন যে সাধারণ মানুষ অনেক হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন।

আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জেনেছি, জন্ম নিবন্ধনের সময় সাধারণ ভুলের কারণেও মানুষকে অনেক হয়রানির শিকার হতে হয়। সুতরাং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এটা অবশ্যই ভালো চিন্তাধারা। তাহলে অন্তত তাদের নামের সংশোধনের ক্ষেত্রে অনেকটা হুঁশিয়ারি পদক্ষেপ তারা গ্রহণ করতে পারবেন।

আমরা প্রকাশিত সংবাদে আরো দেখেছি যে, ‘সচিবালয়ে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, “হয়ত কেউ একটি চাকরি পেয়েছেন, কিন্তু সেখানে যোগ দিতে পারছেন না ওই ভুলের জন্য। হয়ত এক সপ্তাহ বা ১৫ দিন তাকে ঘুরতে হচ্ছে। এদিকে গুরুত্ব দিতে হবে।’ সত্যিই এসব আমাদের গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা উচিত। যেন কোনো মানুষ হয়রানির শিকার না হয় বা ক্ষুব্ধ না হয়ে উঠে। কেননা এর কারণে হয়তো পুঁঞ্জিভূত ক্ষোভ একসময় বেড়ে গিয়ে বিশাল আকার ধারণ করতে পারে; যেটা আমরা কোনোভাবেই আশা করতে পারি না। জন্ম নিবন্ধন বা সনদের সংশোধনের সময় কেউ হয়রানির শিকার হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অবশ্যই উচিত।

প্রকাশিত সংবাদে চমৎকার একটা বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে, সেটা হলো-‘তিনি বলেন, “এটা বলা যাবে না যে তিনি (জন্মনিবন্ধনকারী) অশিক্ষিত বলে ভুল দিয়েছে। আপনি (কর্মকর্তা) তো শিক্ষিত। তিনি অশিক্ষিত বলেই তো আপনাকে এখানে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রকে সার্ভিস দেয়ার জন্য তো আপনি কমিটমেন্ট দিয়ে বসেছেন, আমি কমিটমেন্ট দিয়েছি। আমার কাজ যদি আমি না করি, তাহলে আমি আমার দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারব না।’

সুতরাং আমরা আশা করবো, এই জটিলতা নিরসনে সকল পক্ষের ব্যক্তি সতর্ক থাকবেন ও জন্মনিবন্ধন গ্রহণকারীদের হয়রানি থেকে রক্ষা করবেন।