মাদারীপুরে দুর্ঘটনা : ঘুমচোখে বাস চালাচ্ছিলেন চালক, ৩৩ ঘণ্টায়ও নেননি বিশ্রাম

মাজহারুল ইসলাম (রুবেল),  মাদারীপুর :

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুর এলাকায় পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়েতে চাকা ফেটে বাস খাদে পড়ে ১৯ যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। তবে দীর্ঘ ক্লান্তির কারণেই চালক বাসটির নিয়ন্ত্রণ হারান বলে জানিয়েছে শিবচর হাইওয়ে পুলিশ।

শিবচর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু নাঈম মো. মোফাজ্জেল হক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জেনেছি, ইমাদ পরিবহনের বাসের চালক জাহিদ হাসান দীর্ঘ ৩৩ ঘণ্টা ধরে গাড়ি চালিয়ে ক্লান্ত ছিলেন। তবুও বিশ্রাম না নিয়েই তিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন। সকালে ঘুমচোখে বাস চালাচ্ছিলেন। এ কারণে বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতেই ঘটে গেছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।’

মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকার এক্সপ্রেসওয়েতে ইমাদ পরিবহন দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহতের ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে জেলা প্রশাসক কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি। মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পল্লব কুমার হাজরার নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্য মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান ফকির (পিপিএম), বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ হাসানাত-ই-রাব্বি, মাদারীপুর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হোসেন ছাড়াও বুয়েটের একটি প্রতিনিধি দল কার্যক্রম শুরু করেছে।

কমিটি প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় দোকানদারসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলেন । এছাড়াও কমিটি দুর্ঘটনাকবলিত বাস, হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের কথা রয়েছে তদন্ত কমিটির। দুই কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়ে কমিটি গঠন করেন জেলা প্রশাসক।

তদন্ত কমিটির প্রধান পল্লব হাজরা বলেন, তদন্ত কমিটি কার্যক্রম শুরু করেছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করার চেষ্টা হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমরা আমাদের প্রতিবেদন জমা দেব।

উল্লেখ্য, রোববার ভোররাতে খুলনা থেকে যাত্রী বোঝাই করে ইমাদ পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা-মেট্রো-ব-১৫-৩৩৪৮) ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। বাসটি গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া থেকে ১৫ জন যাত্রী তুলে। পদ্মাসেতুর আগে ঢাকা-খুলনা এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর সিমানা এলাকায় আসলে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। বাসটি এক্সপ্রেস হাইওয়ের নিচের আন্ডারপাসের গাইড ওয়ালের সাথে ধাক্কা লেগে দুমড়ে মুচড়ে যায়।

এতে ঘটনাস্থলেই ১৪ জন নিহত হয়। এ দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫ জনকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাঁচ্চর রয়েল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে নেয়ার পর আরো ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।