চাঁদপুরের হাইমচরে জাটকা নিধনের মহোৎসব

প্রতিদিন ১০ লাখ কেজি জাটকা নিধন : মৎস্য বিভাগ, নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড নিরূপায়

হাইমচর প্রতিনিধি :
প্রতিদিন বিকেল ৪টা হতে রাত ১২টা পর্যন্ত হাইমচরের মেঘনা নদীতে মহাউৎসবে চলছে জাটকা নিধন। হাইমচরে দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ধারণা, প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ কেজি জাটকা নিধন হচ্ছ। প্রতিদিন চাঁদপুর সদর, মতলব উত্তর, মুন্সীগঞ্জ, রাজরাজেশ্বর, কাছিঘাটার কয়েক হাজার জেলে নৌকা বহর নিয়ে হাইমচর মেঘনায় চর দখলের মতো উৎসব করে জাটকা নিধন চলায়।

স্থানীয়রা জানান, জাটকা নিধনকারীরা যখন আসে সমগ্র নদী এলাকা টর্চ লাইটের আলোয় আলোকিত করে চারদিকে আতংক তৈরি, এ সময় সাধারণ মানুষও চলাচল করতে পারে না, সাধারণ জেলেরা অভিযোগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মৎস্য বিভাগ করছে কি?

‌‌’আমাদের সামনে দিয়ে আমাদের নদীর মাছ ধরে নিয়ে যায়, আর যতো হামলা-মামলা আমাদের উপর, যদি রক্ষা না করেন তা হলে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেন’- কথাগুলো বলেছেন হাইমচরের নিরীহ জেলেরা।

gif maker

তেলীর মোড় এলাকার জেলে মফিজ মাদবর, নেছার খা, হুমায়ুন হাওলাদার জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যায় উত্তর দিক থেকে দল বেঁধে কয়েক শত নৌকায় কয়েক হাজার জেলে সংঘবদ্ধ নৌকায় এসে জাটকা মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা শুধু চেয়া থাকি, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, মৎস্য বিভাগ শুধু নদীর পাড়ে আমাদের এলাকায় অভিযান করে, উত্তরের জেলে নদীতে নিরাপদে মাছ ধরে নিয়ে গেলেও কোন ব্যবস্থা নেয় না।

সরেজমিন রোববার সন্ধ্যায় তেলীর মোড় এলাকায় দেখা যায়, কয়েক শত নৌকা জাটকা শিকার করছে, নিয়ন্ত্রণে কোন অভিযান নেই। প্রত্যক্ষদর্শী বাদশা পেদা বলেন, প্রতিদিন একই চিত্র।

চরভৈরবীর জেলেরা জানায়, চরভৈরবী নৌ-পুলিশ ফাড়ির দক্ষিণে রুহুল আমিন মেম্বারের আড়তে বিল্লাল বেপারী, দাদন মাঝি গং, ফাড়ির উত্তরে বাদশা সরদারের বাড়ি এলাকায় কাজল সরদার, লোকমান গং জাটকা কেনাবেচা করছে।

/
কোস্টগার্ড হাইমচর স্টেশনের কমান্ডার এমদাদ মোবাইল ফোনে এ প্রতিনিধিকে জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ লাখ কেজি জাটকা নিধন করে নিয়ে যাচ্ছে, প্রতিদিন কয়েক হাজার জেলে নৌকা একযোগে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত হাইমচর মেঘনা জাটকা শিকার করে। আমরা নিয়মিত অভিযান করি, ধাওয়া দেই, গ্রেফতার করি।

আমাদের বোট একটা। ওরা কয়েক হাজার জেলে, কিভাবে সম্ভব পুরোপুরি প্রতিহত করা। পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, কোস্টগার্ড সকলের সমন্বিত অভিযান প্রয়োজন, একার পক্ষে জাটকা সংরক্ষণ সম্ভব নয়।

নীলকমল নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির আইসি পুলিশ পরিদর্শক আঃ জলিল বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান করছি, সমন্বিত অভিযান করে এদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। চরভৈরবীতে মাছ কেনাবেচা বন্ধ করতে অভিযান চলছে।

হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী বলেন, বহিরাগত জেলেরা আমার এলাকায় মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে, এদের নিয়ন্ত্রণে কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশকে সমন্বিতভাবে কঠোর অভিযানের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, জাতীয় সম্পদ রক্ষায় কোন ছাড় নয়।