হাইমচরে জেলে কার্ড প্রতি ২শ’ টাকা নেয়ার অভিযোগ নীলকমল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট :

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীল কমল ইউনিয়নে জাটকা রক্ষা কর্মসূচির বিপরীতে জেলেদের বিজিএফ খাদ্য সহায়তার কার্ড প্রতি ২শ’ টাকা করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সর্দারের বিরুদ্ধে।

চাল বিতরণ করার পূর্বেই তিনি তার অনুগত ইউপি সদস্যদের দিয়ে বরাদ্দ পাওয়া জেলেদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ২শ’ টাকা করে নিয়েছেন।

প্রতিবছর চেয়ারম্যান নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে জেলেদের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার বিষয়টি সচেতন অনেকে জানলেও তার প্রভাব এবং ভয়ে মুখ খুলছে না। জেলেদের জন্য বছরের দু’টি বরাদ্দ আসলে টাকা হাতিয়ে নেন চেয়ারম্যান ও তার অনুগত ইউপি সদস্যরা।

অনুসন্ধান করে, স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী জেলেরা জানান, এ বছর মার্চ-এপ্রিল দু’মাস জাটকা রক্ষা কর্মসূচির চাল বিতরণ হয়নি। কিন্তু চেয়ারম্যান আগ থেকেই জেলেদের কাছ থেকে ২শ’ টাকা করে নিয়েগেছেন। এর আগে ২০১৯ সালে ১শ’ টাকা করে নিলেও এ বছর তা বাড়িয়ে ২শ’ টাকা করেছেন। তার এই ধরণের কর্মকান্ডের বিষয়ে গণমাধ্যমে এর আগে বেশ ক’বার সংবাদ প্রকাশ হয়।

gif maker

নিজের ইচ্ছেমত চেয়ারম্যান পরিষদ পরিচালনা করার কারণে বেশ ক’জন ইউপি সদস্য তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে প্রশাসনের নিকট। কিন্তু চেয়ারম্যান বিভিন্নভাবে চেষ্টা তদ্বির চালিয়ে ওই সময় রক্ষা পায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, নীল কমল ইউনিয়নে নিবন্ধিত জেলে সংখ্যা ৩ হাজার ৪৯৫জন। এর মধ্যে এ বছর সরকারিভাবে সকল জেলের জন্য বরাদ্দ আসেনি। সংখ্যানুসারে কোনো কোনো ওয়ার্ডে প্রায় ৭০জন করে জেলে খাদ্য সহায়তার বরাদ্দ থেকে বাদ পড়েছেন। আনুপাতিক হারে ৫ থেকে ৬শ’ জেলের বরাদ্দ না আসলেও ৩ হাজার জেলের কাছ থেকে আনুমানিক ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা উত্তোলন হয়েছে।

এভাবে যতবার খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়, চেয়ারম্যান প্রত্যেক জেলের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। এছাড়াও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদপুর সিএসডি গোডাউনে বিএজএফসহ অন্যান্য বরাদ্দের চাল বিক্রির অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

নীল কমল ইউনিয়নের নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে ৩নং ওয়ার্ডের রহিম বাদশা, নুর মো. বেপারী, মরন আলী, সফিক গাজী, সফিক বহর, ৩নং ওয়ার্ডের শাহজাহান সর্দার, আলাউদ্দিন লস্কর, জালাল সর্দার ছোবহান খালাসী ২শ’ টাকা করে দিয়েছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

এভাবে প্রত্যেক ওয়ার্ডের বরাদ্দ পাওয়া জেলেদের কাছ থেকে ২শ’ টাকা করে নেয়া হয়েছে। কোন জেলে টাকা না দিলে তাকে চাল দেয়া হয় না। বরং চেয়ারম্যান তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন।

এই বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সর্দার জানান, একটি কুচক্র মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি জেলেদের থেকে টাকা নিয়েছি, প্রমাণ করতে পারলে আমার বিচার হবে। আর নহে যে বা যাহার আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে তাদের বিচার হবে।

তিনি জানান, আমার ইউনিয়নে নিবন্ধিত জেলে সংখ্যা ৩ হাজার ৪৯৫জন। কিন্তু ৮’শ কার্ড কম এসেছে। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছে। এ ছাড়াও আড়াইশ টন চাল টলারে আনতে ভাড়া দিতে হয়। ভাড়াতো আর আমি দেবোনা।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান জানান, এমন অভিযোগ পেলে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।