ভোলায় চাল চুরির আসামীকে মুক্তি : ইউএনও-ওসির বিরুদ্ধে আদালতের মামলা

তাপস কুমার মজুমদার, ভোলা প্রতিনিধি :

ভোলার বোরাহানউদ্দিন উপজেলায় সরকারি চাল চুরি করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে আসামী মুক্তি দেয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসির বিরুদ্ধে সুয়ামোট মামলা করেছেন ভোলার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

বৃহষ্পতিবার (১৬ এপ্রিল) ভোলার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফরিদ আলম বোরাহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. বশির উদ্দিন গাজী ও ওসি এনামুল হকের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। যাহা সুয়ামোট মামলা নং-০১/২০২০ (বোরাহানউদ্দিন)।


মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে জানা যায়, বর্তমান করোনা দুর্যোগের পরিস্থিতিতে ত্রাণের চাল আত্নসাৎ ও কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে মজুদের অপরাধের ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ভারপ্রাপ্ত) মো. বশির গাজী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আসামী আব্দুল মান্নানের নিকট হইতে ২৫হাজার টাকা এবং সেলামতকে ১০হাজার টাকা জরিমানা করে মুক্তি প্রদান করেন।

বিদ্যমান ঘটনার সংবাদে প্রথমিকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ইহা ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ ধারার (১) ও (২) ধারার অপরাধ, যাহা স্পেশাল ট্রাইবুনাল কতৃক বিচার্য্য এবং যাহার সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যু দন্ড পর্যন্ত। একই সাথে বর্নিত ঘটনা যদি Penal Code এর ১৮৬০ এর ৩৭৯ ধারা ( যাহার সর্বোচ্চ সাজা ৩ বছর কারাদন্ড) ৪০৩ ধারা যাহার (সর্বোচ্চ সাজা ২ বছর কারাদন্ড) ৪১১ ধারা যাহার (সর্বোচ্চ সাজা ৩ বছর কারাদন্ড) ৪১৪ ধারা ( যাহার সর্বোচ্চ সাজা ৩ বছর কারাদন্ড) সহ আরো অন্যান্য ধারায় অপরাধ মর্মে গন্য করা যায়।

একই সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তি সরকারি কর্মচারী হলে এই ত্রাণের চাল দুর্নীতির মাধ্যমে আত্নসাৎ করা হয়েছে এবং তৎসঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় মর্মে প্রতীয়মান হয়। দুর্নীতি দমন বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক তদন্ত এবং স্পেশাল ট্রাইবুনাল কর্তৃক বিচার্যের অপরাধ।

ইউএনও ভারপ্রাপ্ত বশির গাজী এখতিয়ার বিহীন অর্থদন্ড আরোপের মাধ্যমে অপরাধীকে দায়মুক্তি প্রদান করেছেন এবং রাষ্ট্রীয় আইন, ফৌজদারি বিচার কাঠামো ও বর্তমান সরকারের নীতির সুস্পষ্ট লংঘন করা হয়েছে মর্মে সংবাদ দৃষ্টে প্রতীয়মান হয়।

অপরাধের প্রকৃত বিচারের পথ রুদ্ধ করে তাকে নামমাত্র শাস্তি তথা জরিমানা করে দায়মুক্তি দেয়ায় ইউএনও’র বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুয়ামোট মামলাটি রুজু করে আগামি ২৮ এপ্রিল মোবাইল কোর্ট পরিচালনার যাবতীয় ডকুমেন্টস ও আইনানুগ ব্যাখ্যাসহ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফরিদ আলম-এর কোর্টে উপস্থাপনের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মতর্তাকেও একই নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

প্রসঙ্গতঃ বুধবার ভোলা বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুতুবা নতুন বাজারে মো. ছেলামত নামের এক ব্যবসায়ীর দোকান হতে ৯ বস্তা সরকারি চাউল উদ্ধার করেন বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. বশির গাজী। পরে মোবাইল কোর্টে ব্যবসায়ী ছেলামতকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং ছেলামত যার ‘কাছ থেকে চাউল ক্রয় করেছেন ওই ডিলার আ. মন্নানকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন এ নির্বাহী অফিসার।