বাড়ি ভাড়া মওকুফ ও করোনার চিকিৎসা নিশ্চিতে অবরোধের ডাক

নিউজ ডেস্ক :

করোনার সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়ায় বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভবিষ্যত অন্ধকার। জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিটি করপোরেশনের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডকে রেড জোন ঘোষণা করলে সিটি করপোরেশন বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। দুটি ওয়ার্ডে নামমাত্র লকডাউন করা নিয়েও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। এ অবস্থায় করোনা পরিস্থিতিতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভবিষ্যত অন্ধকার।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশাল জেলা শাখার নেতারা এসব অভিযোগ করে অবরোধের ডাক দিয়েছেন। একই সঙ্গে এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আট দফা দাবি উত্থাপন করেছে তারা। পাশাপাশি দাবি আদায়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) বরিশালে অবরোধের ডাক দেন তারা।

বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে নগরীর ফকির বাড়ি রোড দলীয় কার্যালয় চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলন করে আট দফা দাবি উত্থাপন ও অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় বাসদ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বাসদের সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, আট দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীর সদর রোড অবরোধ করা হবে। দাবি না মানলে পরবর্তীতে আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।

মনীষা চক্রবর্তী বলেন, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার জন্য মাত্র একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে। ফলে নমুনা জট সৃষ্টি হয়েছে। জটের কারণে ২৩ জুন একজন রোগী নমুনা পরীক্ষার জন্য গেলে তাকে সিরিয়াল দেয়া হয় ১৫ জুলাই। হাসপাতালে ১৮টি আইসিইউ বেড থাকলেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক একজন। জেলায় প্রায় ৩০টি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিক-হাসপাতাল থাকলেও করোনা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই একটিতেও। এসব সমস্যা নিরসনে বরিশালে কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা নেই। এখানকার জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিটি করপোরেশনের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে আমরা আট দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানাচ্ছি।

দাবিগুলো হলো- পিসিআর ল্যাব বৃদ্ধি করে প্রতিদিন কমপক্ষে এক হাজার নমুনা পরীক্ষা নিশ্চিত করা, করোনা রোগীদের জন্য ১০০ শয্যা ও ১০০ আইসিইউ বেড চালু, করোনা রোগীদের বিশেষ অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু, বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ, লকডাউন হওয়া বাসা-বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেয়া, চিকিৎসক-সাংবাদিক-পুলিশসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিতদের ঝুঁকিভাতা প্রদান, এনজিওর কিস্তি আদায় বন্ধ ও বাড়ি-মেস ভাড়া মওকুফ, ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারসহ সব বিল মওকুফ এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের ছাঁটাই বন্ধসহ বকেয়া বেতন প্রদান।


সংবাদ সম্মেলনে বাসদের জেলা আহ্বায়ক প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুম্মন, বাসদ নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন, মাফিয়া বেগম, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের শহীদুল ইসলাম, মিজান হাওলাদার, ফরহাদ, মেজবাহ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সুজন আহমেদ ও সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।