জেনে নিন আমরা কীভাবে ভুলের সাগরে আছি

১. ভুলঃ কোমর ব্যথা মানে কিডনি রোগ!
নির্ভুলঃ কিডনি রোগে প্রস্রাব কমে যায়, খাওয়ার রুচি কমে যায়, বমি বমি লাগে, মুখ ফুলে যায়!

২. ভুলঃ ঘন ঘন প্রস্রাব মানেই ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ!!
নির্ভুলঃ ডায়াবেটিস হলে প্রথম অনুভূতি হল- এতো খেলাম, তবুও কেন শক্তি পাইনা, এছাড়া ওজন কমে যায়, মুখে দুর্গন্ধ হয়, ঘা শুকাতে চায়না!

৩. ভুলঃ ঘাড়ে ব্যথা মানেই প্রেসার!
নির্ভুলঃ প্রেসার বাড়লে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন উপসর্গ
পাওয়া যায় না! একটু অস্বস্তিকর অনুভুতি হয় মাত্র।

৪. ভুলঃ বুকের বামে ব্যথা মানে হার্টের রোগ!
নির্ভুলঃ হার্টের রোগে সাধারণত বুকে ব্যথা হয় না। হলেও বামে নয়তো বুকের মাঝখানে ব্যথা হয়… হার্টের সমস্যায় সাধারণত বুকের মাঝখানে চাপ চাপ অনুভূতি হয়, মনে হয় বুকের মাঝখানটা যেন কেউ শক্ত করে ধরে আছে!!

৫. ভুলঃ মিষ্টি খেলেই ডায়াবেটিস হয়।
নির্ভুলঃ ডায়াবেটিস হরমোনাল অসুখ। অগ্ন্যাশয় ঠিকমত কাজ না করলে ডায়াবেটিস হয়। তাই মিষ্টি খাওয়ার সাথে এই রোগ হবার সম্পর্ক নেই। কিন্তু ডায়াবেটিস হয়ে গেলে মিষ্টি খেতে হয় না।

৬. ভুলঃ প্রেগন্যান্সিতে বেশি পানি খেলে পায়ে পানি আসে।
নির্ভুলঃ প্রেগন্যান্সিতে প্রোটিন কম খেয়ে,
কার্বোহাইড্রেট বেশি খেলে পায়ে পানি আসে। তাই
প্রোটিন বেশি বেশি খেতে হয়।

৭. ভুলঃ এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং করাকালীন বেবির (৬মাসের আগে পানিও খাওয়ানো যায় না একারণে) ডায়রিয়া হলে, মা স্যালাইন খেলেই বেবিরও চাহিদা পূরণ হয়ে যায়।
নির্ভুলঃ মা খেলেই বাচ্চার চাহিদা পূরণ হয় না… বেবিকেও স্যালাইন খাওয়াতে হয়।

৮. ভুলঃ দাঁত তুললে চোখের আর ব্রেইনের ক্ষতি হয়।
নির্ভুলঃ দাঁত তোলার সাথে চোখের আর ব্রেইনের
কোনো সম্পর্ক নেই। দাঁত, চোখ, মাথার নার্ভ সাপ্লাই সম্পূর্ণ আলাদা।

৯. ভুলঃ মাস্টারবেশন করলে চোখের জ্যোতি কমে যায়!
নির্ভুলঃ ভিটামিন এ জাতীয় খাবার না খেলে চোখের জ্যোতি কমে যায়।

১০. টক/ ডিম/ দুধ খেলে ঘা দেরীতে শুকায়।
নির্ভুলঃ টক/ ডিমের সাদা অংশ/ দুধ খেলে ঘা তাড়াতাড়ি শুকায়।

১১. ভুলঃ অস্বাভাবিক আচরন, ভাংচুর, পাগলামি মানেই জ্বিন ভুতে ধরা!!!
নির্ভুলঃ এটা বাইপোলার ডিসঅর্ডার, সিজোফ্রেনিয়া, হ্যালুসিনেশন।

১২. ভুলঃ তালু কাটা, এক চোখ, কপালে চোখ, বাঘের মত ডোরাকাটা দাগ নিয়ে জন্ম গ্রহন করা বাচ্চা কিয়ামতের আলামত, আল্লাহর গজব, বাঘের বাচ্চা।

নির্ভুলঃ মানুষের পেট থেকে বাঘের বাচ্চা হয় না আর কিয়ামতের আলামত বা গজব বাচ্চাদের উপর আসে না। এসব জিনগত রোগ বা জন্মগত রোগ।

১৩. ভুলঃ প্রেগন্যান্ট মহিলা আয়রণ, ক্যালসিয়াম এসব খেলে বাচ্চা বড় হয়ে যায়। তাই গাইনী ডাক্তার সিজার করার জন্য এগুলা প্রেসক্রাইব করে….
নির্ভুলঃ প্রেগন্যান্ট মহিলা আয়রণ, ক্যালসিয়াম না খেলে গর্ভস্থ বেবির নিউরাল টিউব ডিফেক্ট হয়।

১৪. ভুলঃ প্রেগন্যান্সিতে সাদাস্রাব হলে ফ্লুইড কমে যায়।
নির্ভুলঃ White discharge এবং Amniotic fluid সম্পূর্ণ আলাদা দুটো ফ্লুইড.. একটার সাথে আর একটার কোনো সম্পর্ক নেই।

১৫. বাচ্চা না হওয়া মানেই বন্ধ্যা নারী।
নির্ভুলঃ বন্ধ্যা, নারী এবং পুরুষ উভয়ই হতে পারে।।
__________________________________________
এ ধরণের আরো অনেক ধরণের গুজব বা কুসংস্কার আমাদের সমাজে প্রচলিত, যেগুলোর কোনো ভিত্তি বা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই।