রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত

সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার। আর এজন্যই আমরা তার প্রশংসা করি। তার নিকট সহায্য,ক্ষমা,প্রার্থনা এবং সর্বদা তারই উপর ভরসা রাখি। আমরা মহান প্রভুর নিকট আশ্রয় কামনা করছি।

আমাদের নফসের অন্যায় আচরণ এবং খারাপ আমলের অনিষ্ট হতে।বস্তুতঃ-মহান আল্লাহ যাকে হেদায়েত দান করেন তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারেনা।আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন পৃথবীতে এমন কেউ নেই যে তাকে হেদায়েত করবে।

হে মানুষেরা আপনারা আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হোন রমযানের রোযা পালন করুন এবং আপনারা জেনে রাখুন রোযাদারগণ হলো মহান আল্লাহর মেহমান।

হে ঈমানদারগণ তোমাদের উপর রমযানের রোযা ফরয করা হয়েছে যেমনিভাবে রোজা ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের উপর যাতে তোমরা পরহেজগার হতে পারো। (সূরা বাকারা-১৮৩)।

রোজার ফজিলতে বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে তন্মধ্যে হযরত সাহল ইবনে সাদ (রাঃ)-থেকে বর্ণিত রাসূল (সাঃ)-ইরশাদ করেনঃ-জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে! উহার একটি দরজার নাম হল রাইয়্যান বা (পরিতৃপ্তকারী)। এ দরজা দিয়ে কেবলমাত্র রোযদারগণই প্রবেশ করবেন।
(বুখারী-মুসলিম)।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)-থেকে বর্ণিত রাসূল (সাঃ)-ইরশাদ করেছেনঃ-আদম সন্তানের নেক আমল বাড়ানো হয়ে থাকে। প্রত্যেক নেক আমল দশগুণ হতে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয় আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ-সেটা হলো রোজা ছাড়া।

কেননা রোজা আমার জন্য এবং আমিই তার প্রতিদান দিব। কারন,সে আমার জন্য আপন প্রবৃত্তি ও খানাপিনার জিনিস ত্যাগ করেছে।রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে। যেমনঃ-১)ইফতারের সময় ২)বেহেশতে আপন পরওয়ারদেগারের সাথে সাক্ষাতের সময়।
নিশ্চয় রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশকের খুশবু অপেক্ষা অধিক সুগন্ধময়।

রোজা হচ্ছে মানুষের জন্য দোযখের আগুন হতে রক্ষার ঢালস্বরূপ।সুতরাং যখন তোমাদের মধ্যে কারোর জন্য রোজার দিন আসে সে যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং অনার্থ শোরগোল না করে।যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সাথে ঝগড়া করতে চাই সে যেন বলে আমি একজন রোজাদার। (বুখারী-মুসলিম)।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)-থেকে বর্ণিত রাসূল (সাঃ)-ইরশাদ করেনঃ-প্রত্যেক বস্তুরই যাকাত আছে শরীরের যাকাত হলো রোজা।(ইবনে মাজাহ)।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)-হতে বর্ণিত রাসূল (সাঃ)-ইরশাদ করেনঃ-যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে একদিন রোজা রাখবে আল্লাহ তায়ালা তাকে দোযখ হতে ঐ পরিমাণ দূরে রাখবেন যেমনটি একটি কাক বাচ্চাকাল হতে বৃদ্ধকাল পর্যন্ত যত দূর উড়তে পারে।
(বায়হাকী)।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)-হতে বর্ণিত রাসূল (সাঃ)-ইরশাদ করেনঃ-যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমযানের রোযা পালন করবে আল্লাহ তার অতীত জীবনের যাবতীয় গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দিবেন।(বুখারী)।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ)-হতে বর্ণিত রাসূল (সাঃ)-ইরশাদ করেনঃ-রোজা এবং কুরআন বান্দার জন্য হাশর দিবসে সুপারিশ করবে।রোজা বলবে হে প্রভু! আমি আপনার বান্দাকে দিনের বেলা পানাহার ও প্রবৃত্তির চাহিদা হতে বিরত রেখেছি সুতরাং আপনি তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন।

কুরআন বলবে আমি তাকে রাতে নিদ্রা হতে ফিরিয়ে রেখেছি সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। অতঃপর ঐ ব্যক্তির ব্যাপারে রোজা ও কুরআনের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। (বায়হাকী)।

পরিশেষে মহান প্রতিপালকের নিকট বিতাড়িত শয়তানের প্ররোচনা হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি মহান আল্লাহ তায়ালা যেন রমজান মাসের রোজা রাখার তৌফিক দান করেন এবং রোজা কে আমাদের জন্য সুপারিশকারী হিসেবে গ্রহণ করেন।

লেখক : মো. রফিকুল ইসলাম (রানা)। শিক্ষার্থী : ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়।