ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার বর্ণনা দিলেন বেঁচে ফেরা জুবায়ের

নিউজ ডেস্ক :

পাকিস্তানের করাচি শহরে বিমান বিধ্বস্ত বিমানের ৯৯ যাত্রীর দুজন ছাড়া সবার মৃত্যু হয়েছে। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা দুজনের একজন মুহাম্মদ জুবায়ের সেই সময়ের কথা জানিয়েছেন। তার বর্ণনায় দুর্ঘটনার সময়টায় চারপাশে ‘শুধু আগুন’দেখছিলেন তিনি।

লাহোর থেকে ছেড়ে আসা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস- পিআইএ’র একটি বিমান শুক্রবার (২২ মে) দুপুরে করাচি বিমানবন্দরে অবতরণ করার সময় অল্প দূরের আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।

ঈদ উপলক্ষে এয়ারবাস এ৩২০ এর পিকে৮৩০৩ ফ্লাইটে করে করাচিতে আসছিলেন জুবায়ের। বিমানটি স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটায় যখন অবতরণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখনই বিধ্বস্ত হয়।

বেঁচে যাওয়া জুবায়ের ছোটখাটো কিছু আঘাত ছাড়া তেমন কোনো জখম নেই। তিনি জানান, বিমানটি অবতরণের চেষ্টা নেয়ার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি বিধ্বস্ত হতে যাচ্ছে, এটা কেউই বুঝতে পারছিল না; খুবই সাবলীলভাবে বিমানটি চালান তারা (পাইলটরা)।

এরপর আর কিছু মনে নেই জুবায়েরের। চেতনা ফেরার পরের দৃশ্য নিয়ে তিনি বলেন, চতুর্দিক থেকে কেবল চিৎকার শুনতে পাচ্ছিলাম। শিশু-বয়স্কদের চিৎকার। আমি শুধু আগুন আর আগুন দেখছিলাম। আমি কাউকে দেখতে পাচ্ছিলাম না- কেবল তাদের চিৎকার শুনতে পাচ্ছিলাম।

আমি আমার সিটবেল্ট খুলে ফেলি। সামান্য আলো দেখতে পারছিলাম- ওই আলোটার দিকে আমি ছুটে যাই। ওখান থেকে নিরাপদ স্থানে যেতে আমাকে প্রায় ১০ মিটার উঁচু থেকে লাফ দিতে হয়।

সিন্দু প্রদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে বিমান বিধ্বস্তে মৃত্যু হওয়া ৯৭ যাত্রীর ১৯ জনকে শনাক্ত করা গেছে। বাকিদের পরিচয় শনাক্তে করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিএনএ টেস্ট করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে এএফপি।

বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর পরই ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। আগুন নিভিয়ে ধ্বংসাবশেষ থেকে যাত্রীদের উদ্ধারে উদ্ধারকারীদের সঙ্গে যোগ দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। উদ্ধারকার্যের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন এএফপি’র একজন রিপোর্টারও।

পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস- পিআইএ জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুর আড়াইটার পর পরই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে লাহোর থেকে করাচিগামী বিমানটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

পবিত্র রমজান শেষে পাকিস্তানিরা যখন ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন এমন ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশটিতে। যাত্রীদের অধিকাংশই ঈদ উপলক্ষে বাড়ি ফিরছিল।

বিমানটিতে কোনো ধরনের ত্রুটি ছিল না বলে দাবি করেছেন পিআইএ’র প্রধান নির্বাহী আরশাদ মাহমুদ মালিক। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এ৩২০ এয়ারবাসটা অন্যতম নিরাপদ বিমান ছিল। কারিগরি ও কার্যকারিতা সবদিক থেকেই ঠিকঠাক ছিল।