`মানুষের মনে কোনো আনন্দ নেই, এক কঠিন মুহূর্ত’

 

এক মাস রোজা রাখার পর খুশির ঈদ এলেও মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে তা নিরানন্দ হয়ে গেছে। ঈদের খুশির বদলে মানুষের মনে আতঙ্ক আর নানা দুশ্চিন্তা ভর করেছে।

আতঙ্ক আর দুশ্চিন্তা নিয়ে মসজিদে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। তবে অন্য বার ঈদের নামাজ শেষে একজন আরেকজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নেয়ার যে দৃশ্য দেখা যেত এবার তা দেখা যায়নি।

রামপুরা সালামবাগ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করা ইয়ানুর বলেন, ঈদের দিন এমন হবে কোনোদিন ভাবিনি। রোজার শেষে ঈদ এসেছে, কিন্তু ঈদের সেই আমেজ কোথাও নেই। ঈদের নামাজ পড়েছি আতঙ্ক আর দুশ্চিন্তা নিয়ে।

তিনি বলেন, মহামারি করোনাভাইরাস আমাদের সব আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। কবে এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাব তার কোনো ঠিক নেই।

সিফাত নামের একজন বলেন, অন্যবার ঈদের দিন বন্ধুরা মিলে কত হইহুল্লোড় করে বেড়িয়েছি। এবার আর কোনো কিছু নেই। একবন্ধু আরেক বন্ধুর বাসায় দাওয়াত খেতে যাব তার সুযোগ নেই। এমন পরিস্থিতির ঈদ খুশির বদলে বেদনা দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, জীবনে আর কখনো ইমন ঈদের দিন আসবে কি-না জানিনা। তবে যতদিন বেঁচে থাকব এই ঈদের দিনের কথা মনে থাকবে। এ কথা কখনো ভুলব না।

ষাটোর্ধ্ব মমিনুল ইসলাম বলেন, বয়স আমার কম হয়নি। যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ সবই দেখেছি। কিন্তু এমন দৃশ্য কখনো দেখিনি। কোনো যুদ্ধ নেই, হানাহানি নেই তারপরও মানুষের মনে কোনো আনন্দ নেই। এক কঠিন মুহূর্ত।

তিনি বলেন, প্রতিবছরই ঈদের দিন প্রতিবেশীদের সঙ্গে আনন্দ করেছি। বন্ধু, বড় ভাই, পরিচিতজনদের ঈদের নামাজ শেষে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করেছে। এবার কারো সঙ্গে কোলাকুলি করার কোনো সুযোগ হয়নি। দূরে দাঁড়িয়ে একজন আরেকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। কোলাকুলি করতে না পারার বেদনায় বুক ফেটে যাওয়ার মতো অবস্থা। কিন্তু কিছু করার নেই। এ পরিস্থিতি আমাদের সবাইকে মেনে নিতে হবে।

সাইফুল ইসলাম নামের একজন বলেন, মনে করেছিলাম রোজার ভিতর করোনার প্রকোপ শেষ হয়ে যাবে। ঈদের দিন নতুন পরিবেশে সবাই আনন্দ করব। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে পরিস্থিতি তত খারাপ হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আনন্দ কিভাবে আসবে। নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি আমরা যেন দ্রুত এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে পারি।