শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়লো

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে স্কুল-কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে।

সোমবার (১৩ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়েরের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের সার্বিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলমান ছুটি আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ার কারণে কয়েক দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ানো হয়েছে। আজ সোমবার ছুটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নতুনভাবে তা দীর্ঘায়িত করা হলো ৬ আগস্ট পর্যন্ত।

 

প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের ফেসবুক গ্রুপ-পেজে যুক্ত হওয়ার নির্দেশ

দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ফেসবুক গ্রুপ ও পেজে যুক্ত হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।

Head Teachers of GPS BD ফেসবুক গ্রুপ এবং Directorate of Primary Education নামের ফেসবুক পেজে জরুরিভিত্তিতে তাদের যুক্ত হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ এ বিষয়ে বলেন, ‘প্রশাসনিক কাজে বিভিন্ন নির্দেশনা পেতে ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে প্রধান শিক্ষকদের সংযুক্ত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যাতে করে তারা সরকারের নির্দেশনার বিষয়ে সবসময় তৎপর থাকতে পারেন।’

Head Teachers of GPS BD ফেসবুক গ্রুপ এবং Directorate of Primary Education নামের ফেসবুক পেজে জরুরিভিত্তিতে যুক্ত করার ব্যবস্থা নিতে জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রোববার (১৪ জুন) এ নির্দেশনা দেয়া হয়।

প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেবেন বাবা-মা

শিক্ষকরা প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা নেবেন এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তারা প্রশ্ন তৈরি করে মোবাইল ফোনে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাবেন। বাড়িতে বাবা-মা তথা অভিভাবকরা সেই প্রশ্নের আলোকে পরীক্ষা নেবেন।

তবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে এমন তথ্যে কিছু বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে। সে কারণে গতকাল সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ স্বাক্ষরিত এক আদেশে বিষয়টি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।

আদেশে বলা হয়, ‘শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি পরীক্ষা গ্রহণের কোনো নির্দেশনা প্রদান করা হয়নি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলা ও সংক্রমণ প্রতিরোধে সব নির্দেশনা ও কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং শিক্ষার্থীরা যাতে ঘরে থাকে, নিরাপদে থাকে, সুস্থ থাকে, আনন্দে থাকে, ‘ঘরে বসে শিখি’ পাঠে অংশগ্রহণ ও বাড়ির কাজ সম্পাদন করাসহ লেখাপড়ায় মনোযোগী থাকে, সে জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও নিরাপদে থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’

জানা গেছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার সংবাদ মূলত বিভিন্ন জেলার মাঠ পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তা ছড়িয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার তাদের অধীনস্থ শিক্ষকদের শিক্ষার্থীদের বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনাও দিয়েছেন।

তাদের সেই নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিজ হাতে অধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্নপত্র তৈরি করে তা ছাপিয়ে শিক্ষার্থীদের ঘরে ঘরে গিয়ে পরীক্ষা নিতে হবে এবং মূল্যায়ন করতে হবে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে এই কার্যক্রম বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গতকাল সোমবার রাতে ডিপিই থেকে একটি আদেশ জারি করা হয়। আদেশে বিষয়টি নাকচ করে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, অধিদফতর থেকে এ ধরনের নির্দেশনা দেওয়া না হলেও মাঠ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা এমন নির্দেশনা দিচ্ছেন। কিছু কিছু শিক্ষক নেতা অতিউৎসাহী হয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্বুদ্ধ করছেন। তারা আবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা নিতে শিক্ষকদের পাঠাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, বাড়ি বাড়ি যাওয়ার নির্দেশনা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করবে। ঘরে ঘরে গিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার সময় কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হলে তার দায়ভার কী কর্মকর্তারা নেবেন? উল্টোপাল্টা আদেশ-নির্দেশ দিয়ে তারা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, কোনো শিক্ষককেই শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। শিক্ষকরা করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করে প্রশ্ন তৈরি করে মোবাইল ফোনে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাবেন। বাড়িতে অভিভাবকরা সেই প্রশ্নের আলোকে পরীক্ষা নেবেন।

তবে স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে সেসব উত্তরপত্র এনে শিক্ষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন।