শিশু ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত

১২ আগস্ট ২০২০ খ্রিস্টাব্দ
২৮ শ্রাবণ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
২১ জিলহজ ১৪৪১ হিজরি

প্রকাশিত : বুধবার

সম্পাদকীয়…

কিছু ঘটনা আমাদের ভাবিয়ে তোলে, আমরা মর্মাহত হই। মনের অজান্তেই কান্না আসে, এমনিতেই চোখের জল গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু যারা ঘটনা ঘটায় তাদের কেমন লাগে? এসবের কোনো কিছুই তাদের হয় না। কারণ, যখন তারা এসব ঘটনা ঘটায় তখন তারা মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলে। হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে এমন অমানসিক ঘটনা ঘটায়। তারা আগ-পিছ কোনো কিছুই ভাবে না। এই ঘটনার জন্যে যে শাস্তি রয়েছে, সেটি তারা মুহূর্তের মধ্যে ভুলে যায়। ঘটনা শুনে আমাদের নির্ঘাত মনে হয়, আমরা এক অসভ্য জগতে বাস করছি না তো!

তেমনি এক ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জে। গত ১০ আগস্ট প্রিয় সময়ে ‘১০ বছরের শিশুকে গণধর্ষণের পর হত্যা, নদীতে ফেলল লাশ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি আমাদের কাঁদিয়ে ছাড়লো। ঘটনার বিবরণ শুনে ঐ তিনজনকে নরপশু বললে খুব কমই বলা হবে।

একটি নিষ্পাপ শিশু দিশা মণি। বাড়ির পাশের প্রাইমারী স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়তে। মাত্র দশ বছর বয়স তার। তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কৌশলে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে গণধর্ষণের পর হত্যা করে শীতলক্ষ্যা নদীতে তার মরদেহ ফেলে দেয়। প্রেমিকসহ তিনজন পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে।

ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে তারা নিজেরাই। যখন তারা বর্ণনা দিচ্ছিলো তখন তাদের কেমন লাগছিলো, সেটাই চিন্তার বিষয়। এমন কুরুচি সম্পন্ন মানুষের জন্ম না হলে কি ভালো হতো না?

আমরা ঘটনার বিবরণে জেনেছি যে, ছোট মেয়েটি একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সময় প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যায় কথিক ব্যক্তির সাথে। তিন মাসের সম্পর্কের বিশ্বাসের ভিত্তিতে মেয়েটিকে নিয়ে ঘুরতে যায়। এতে সহায়তা করের্ছিলো তারই একজন বিশ^স্ত বন্ধু। কিন্তু বিশ্বস্ত বন্ধুই যে তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে এবং নিজের প্রেমিকের সাথে হাত মিলিয়ে তার সর্বনাশ করবে সেটা মেয়েটি মোটেও ভাবতে পারেনি। এরপর যা ঘটার তা ঘটে গেলো। বেঁচে থাকলে ঘটনা জানাজানি হবে মনে করে, তাকে গলা টিপে হত্যা করে এবং নদীতে লাশ ফেলে দেয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তিনজনের, তারা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।

আরো সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, দিশামনি মারা গিয়েও মা বাবার কাছে যেতে পারেনি। আমরা জেনেছি তার লাশ প্রকাশিত সংবাদটি লেখা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

এখানে আমরা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি যে, মেয়েটি উঠতি বয়সী ছিলো। তার মধ্যে আবেগ কাজ করেছিলো। ফলে অতি সহজেই প্রেমের ফাঁদে পা দিয়েছিলো। কিন্তু তার সরল বিশ্বাসের মূল্য সে পায়নি। মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হতে হয়েছে তাকে। মেয়েটির বাবা তার মেয়ে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়েছে। একইভাবে আমরাও দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাইতে পারি-যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এখন শুধু দেখার অপেক্ষা তাদের কী শাস্তি হয়!