৬ষ্ঠ শ্রেণির স্কুল ছাত্রী গণধর্ষণের ঘটনায় ৪জনকে আটক করেছে র‌্যাব

রোমান শিকদার স্টাফ রিপোর্টার (মাদারীপুর)

চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়ায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির স্কুল ছাত্রী গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ০৪ জনকে ঢাকা, মাদারীপুর এবং গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত অগ্রনী ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে অদ্যাবধি জঙ্গি, মাদক, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, অপহরণকারী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ ও প্রতারকচক্র গ্রেফতারে সদা তৎপর রয়েছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের মত নেক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের দ্রততম সময়ের মধ্যে আটক করে আইনের আওতায় এনে সাধারণ জনমনে স্বতি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব।

যেখানেই মানবাধিকার লুণ্ঠিত হয়েছে, নারী অধিকার ক্ষুন্ন করা হয়েছে বা নারী নির্যাতন/ধর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেছে, র‌্যাব তৎক্ষণাৎ ভিকটিম অথবা নির্যাতিতার পাশে দাঁড়িয়েছে এবং ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের দ্রততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজার পর্যটন এলাকায় নির্মম, মর্মান্তিকও পৈশাচিক ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী, যেখানে ভিকটিম মা তার ৮ মাস বয়সি অসুস্থ শিশুর চিকিৎসার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে সাহায্য কামনা করছিল র‌্যাব। এই ঘটনার সাথে জড়িত ধর্ষককে র‌্যাব দ্রততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের হাতে সোপর্দ করেছে । তাছাড়া কিছুদিন পূর্বে গোপালগঞ্জ জেলার একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী ন্যাক্কারজনকভাবে গণধর্ষনের শিকার হলে তাৎক্ষনিক তাদেরওকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় একজন ৬ষ্ঠ শ্রেনির স্কুল ছাত্রী ন্যাক্কারজনকভাবে গণধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতা গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং-০১, তারিখঃ ০৬ এপ্রিল ২০২২। যাহা বিভিন্ন পত্র পত্রিকা, গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উক্ত ঘটনা আলোচনা ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে উক্ত ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায়, র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৮ এর অভিযানে গত ০৯ এপ্রিল ২০২২ তারিখ কোম্পানী অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লীডার মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম এবং সহকারী পরিচালক মোঃ রবিউল ইসলাম এর নেতৃত্বে ঢাকা জেলার শাহাবাগ হতে ১নং আসামি গোপাল বাড়ৈ (৩০), পিতাঃ কালু বাড়ৈ, সাং-পলটানা, থানাঃ কোটালীপাড়া, জেলাঃ গোপালগঞ্জ‘কে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্য মোতাবেক মাদারীপুর জেলার শিবচর হতে বরুন বালা (২৩), পিতাঃ নারায়ন বালা, সাং-মশুরিয়া, এবং গোপালগঞ্জ এর কোটালীপাড়া হতে অটল বাড়ৈ (২২), পিতাঃ খোকন বাড়ৈ, সাং-পলটানা, এবং প্লাবন বাড়ৈর (২৫), পিতাঃ প্রতাপ চন্দ্র বাড়ৈ, সাং-পলটানা সর্ব থানাঃ কোটালীপাড়া, জেলাঃ গোপালগঞ্জগণ‘কে একটি মাছের ঘের হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা গণধর্ষণের সাথে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় গত ২৬শে মার্চ ২০২২ তারিখ রাতে ভূক্তভোগী গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ার পীড়ার বাড়ি মন্দির হইতে গান শুনে মামা বাড়ি যাওয়ার পথে গ্রেফতারকৃত আসামীরা উক্ত ভিকটিমের গলায় দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে মোটরসাইকেল যোগে অজ্ঞাত স্থানের একটি দোতলা ভবনে তুলে নিয়ে প্রথমে ভিকটিমকে নগ্ন করে ভিডিও করে।

তারপর গ্রেফতারকৃত আসামীরা সবাই ভিকটিমকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং নেশাজাতীয় কোন বস্তুু খাইয়ে দিয়ে সারারাত পালাক্রমে নির্যাতন করে। পরের দিন ১ নং আসামি গোপালের এক আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে যায় এবং উচ্চ স্পীকারে বক্স বাজিয়ে ০৩ (তিন) দিন ধরে পালাক্রমে আবারো ধর্ষন করে। এক পর্যায়ে ভিকটিম জানালা ভেঙ্গে পালিয়ে পাশের বাড়ি আশ্রয় নেয়।

র‌্যাব-৮, সিপিসি-৩ মাদারীপুর ক্যাম স্কোয়াড্রন লীডার, কোম্পানী অধিনায়ক, সাদেকুল ইসলাম বলেন, উক্ত মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।