ধর্ষণ থেকে বাঁচতে লম্পটের পুরুষাঙ্গ কেটে দিলো নারী

সম্পাদকীয়…

এমন কিছু ঘটনা আমাদের সমাজে হঠাৎই ঘটে যায় যে, যা শোনার পর কারো কারো কাছে ‘এটা নিষ্ঠুরতা’ বলে মনে হয়! আবার কারো কারো কাছে ‘উচিৎ শিক্ষা’ বলে মনে হয়। আবার কারো কারো কাছে ‘হাস্যকর’ বলেও মনে হয়। আর দু:খের মাঝেও সে হাসিটা হেসে যেতে হয়।

প্রিয় সময়ে ‘ধর্ষণ থেকে বাঁচতে যুবকের পুরুষাঙ্গ কেটে দিলেন নারী’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি পড়ার পর পাঠকের কাছে কেমন লেগেছে বা প্রতিটি পাঠক কী ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন? যেহেতু বিষয়টি অসামাজিক ও লজ্জাজনক কার্যকলাপের মধ্যে পড়ে তাই কষ্ট পেলেও মুখ চেপে পাশে থাকা মানুষকে আনন্দের ভাগীদার বানিয়ে হেসেছেন হয়তো! কেননা না হেসে থাকার বিষয় এটি নয়!

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে, ঘটনাটি ঘটেছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভাষানচর গ্রামে দিবাগত রাত ১২টার দিকে। উল্লেখিত নারী সম্ভ্রম রক্ষার্থে ধর্ষণের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে সুযোগ বুঝে ধর্ষণ চেষ্টাকারীর পুরুষাঙ্গ কেটে দিয়েছেন। ঘটনার বিবরণ থেকে জানা গেছে যে, সেই ভুক্তভোগী নারী দুই সন্তানের জননী। তার স্বামী নদীতে মাছ শিকার করে কোনোমতে সংসার চালাচ্ছিলেন। সংসারের অভাব মোচনের জন্যে স্বামীর পেশার পাশাপাশি নকশিকাঁথা তৈরি করে বিক্রি করেন। বন্ধুত্বের সুবাদে স্বামীর বন্ধু নাঈম তাদের বাড়ি যাওয়া-আসা করতে থাকে। সময়সুযোগ বুঝে বেশ কয়েক মাস ধরে ঐ গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে। এতে গৃহবধূ তাকে বারবার সতর্ক করে দিয়েছেন। তবুও তাকে বিরক্ত করেই চলেছিলেন। একদিন রাতে তার স্বামী নদীতে মাছ শিকার করতে যাওয়ায় বাড়ি ফাঁকা ছিল। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে সেই গৃহবধূ রাত ১২টার দিকে ঘর থেকে বের হয়ে বাথরুমে যায়। এ সুযোগে ঘরে ঢুকে খাটের নিচে লুকিয়ে থাকে নাঈম। বাথরুম থেকে এসে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে গৃহবধূ। বেশ কিছুক্ষণ পর হঠাৎ গৃহবধূর মুখ চেপে ধরে আমার জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় তার স্বামীর বন্ধু নাঈম। নিজেকে রক্ষার জন্যে ধস্তাধস্তি লেগে যায়। বুদ্ধি করে সেই গৃহবধূ খাটের পাশে থাকা সুঁই-সুতার বক্স থেকে ব্লেড বের করে নাঈমের পুরুষাঙ্গ কেটে দেয়। আর নাঈম চিৎকার করলে স্থানীয়রা ছুটে আসে।

ঘটনাটিকে নিশ্চয় অনেকে সেই গৃহবধুর দু:সাহসীক ভালো কাজ হয়েছে বলে মনে করছেন! সেই মহিলা যেটা করেছেন নিজেকে রক্ষার জন্যেই করেছেন। আমরা মনে করি, সেই গৃহবধূর এছাড়া আর কিছুই করার ছিলো না। কেননা এটা না করতে পারলে নিজেকে সেই গৃহবধূ রক্ষা করতে পারতো না সেই নরপশু থেকে, তার ইজ্জত লুটে নিতো! আমরাও মনে করি, সেই গৃহবধূ সাহসের সাথে প্রতিবাদ করায় তার ইজ্জত রক্ষা করতে পেরেছে। তবে এটা দু:খজনক যে, দুর্বলের পক্ষে মানুষ খুব কমই সমর্থন করে। কেননা ঘটনার পর থেকেই নাঈমের পরিবার ও স্থানীয় কয়েকজন মাদকসেবী বিভিন্নভাবে সেই পরিবারকে ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে বলে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। বর্তমানে সেই পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা আরো জানতে পেরেছি যে, নাঈম এলাকার চিহ্নিত লম্পট। সেই দুশ্চরিত্রের অধিকারী নাঈম এর আগেও এলাকার কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছিল এবং ঘটনা ধরা পড়ায় কয়েকবার তাকে জরিমানা করা হয়েছিলো।

আমরা মনে করি, এ ধরনের চিহ্নিত লম্পট এলাকায় থাকলে তাদেরকে প্রশ্রয় না দিয়ে শাসন করা উচিত। প্রথম ঘটনা ধরা পড়ার পরই তাদেরকে আইনেরও আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শািস্ত দেয়া উচিত। তাহলে পরবর্তীতে আর এভাবে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করতে সাহস পাবে না।

আমরা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, প্রিয় সময় গুজব প্রচার করে না

০৬ অক্টোবর ২০২০ খ্রি. ২১ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ১৮ সফর ১৪৪২ হিজরি, মঙ্গলবার