ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত

সম্পাদকীয় …

আমরা নারীদের এখনো কোনো নিরাপত্তা দিতে পারি না। একের পর এক ঘটে চলেছে নারী ধর্ষণের ঘটনা। শরীর শির শির করে উঠে এক একটি ঘটনার বর্ণনা শুনে। তখন আমাদের উপলব্ধি হয় যে, সেই নারীর জীবন ক্ষতবিক্ষত, সেই সাথে সে যে পরিবার আত্মীয়দের সাথে সম্পৃক্ত তাদের কী করুণ পরিস্থিতি! এসব ভাবলে মনে বড়ই আঘাতের জন্ম নেয়।

ধর্ষিতা একজন নারীর মনের অবস্থাটা পরিমাপ করার মতো ক্ষমতা আমাদের অনেকসময় হয় না। বিশেষ করে যারা সুযোগ পেলে ধর্ষণ করে তাদের মনুষ্যত্ব একেবারে লোপ পেয়ে যায়। তারা মানুষ নামের পশু ও হিং¯্র হায়েনা। অন্যথায় তারা যখন ধর্ষণের মতো জঘন্য পাপ কাজ করে তখন কেনো তাদের হৃদয়ে একটুও অনুভূতি জেগে উঠে না? তাদেরও তো ঘরে মা আছে, আছে নিজের মেয়ে অথবা বোন।

আমরা মনে করি ঘর্ষণের শাস্তিটা যদি কঠোর হয় তাহলে এভাবে ঘন ঘন ধর্ষণ হবে না আমাদের নারীদের। প্রিয় সময়ে ‘পালাক্রমে গাড়ির ভেতরই ওরা আমার ইজ্জত লুটে নেয়’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি আমাদের আরেকবার মনে করিয়ে দেয় আমাদের সমাজের নারীরা কতোটা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম যে, ধর্ষিতা সেই নারী নিজের মুখেই বলেছেন, ‘ভোর তখন আনুমানিক ৪টা। রাস্তায় লোকজন খুব কম। গাড়ি থেকে অন্য সব যাত্রী নেমে পড়েছেন। হঠাৎ গাড়ির দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় ভেতরের প্রায় সব লাইট। এরপর পালাক্রমে গাড়ির ভেতরই ওরা আমার ইজ্জত লুটে নেয়। তখনই তাদের আমি ধর্মের বাবা ও ভাই ডেকেই রক্ষা পাইনি।’ একজন নারীর মুখ থেকে এমন লোমহর্ষক শব্দগুলো শুনে আমাদের মানবতা ভুলুণ্ঠিত হওয়ার ইঙ্গিতই প্রদান করে। গণধর্ষণের শিকার সেই তরুণীর সেই রাতের ভয়াবহ বর্ণনা আমাদের কাঁদিয়েছে মনুষ্যত্ব আছে এমন প্রতিটি মানুষকেই।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে, সেই ঘটনায় পুলিশ বাসের চালক ও হেলপারকে গ্রেফতার করেছে। আদালতে উভয়ের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। এখন শুধু দেখার অপেক্ষা তাদের কী শাস্তি হয়!

ষোল বছর বয়সী সেই নারী গাজীপুরের একটি গার্মেন্টসে চাকুরি করতো। করোনার কারণে পাঁচ মাস আগে বাড়ি চলে আসে। পুনরায় চাকরির সন্ধানে বাড়ি থেকে ঢাকায় গিয়ে জেঠাতো বোনের বাসায় গিয়ে উঠেছিলো। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনার শিকার হয়। প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জেনেছি, সেই নারীর মা তার মেয়ের ওপর নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। ঘটনার পর পরই তিশা পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ওই গাড়ির মালিক দুলাল হোসেন অপু সেই গাড়ির (ঢাকা মেট্রো-ব ১৫-৩৯৮) চালক ও হেলপারসহ দুই আসামিকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে।

আমাদের আর ভালো লাগে না, ভালো লাগার কথাও নয়। এভাবে একের পর এক ঘটনা আমাদের চিন্তাচেতনাকে নষ্ট করে দিচ্ছে। এ থেকেই কি পরিত্রাণের কোনোই পথ নেই? যদি ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি দেয়া হয় তাহলেই নারী ধর্ষণ করার সাহস আর কেউ পেতো না। আমরা ওই অসহায় নারীর ধর্ষণ হওয়ার উচিত শাস্তি প্রত্যাশা করছি।

আমরা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, প্রিয় সময় গুজব প্রচার করে না

২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রি. ০৭ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ০৪ সফর ১৪৪২ হিজরি, মঙ্গলবার