মো. সোহেল কিরণ :
সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় ডুবে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চটি উদ্ধারে কাজ করছিল উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়৷ সোমবার (৫ এপ্রিল) দুপুর সোয়া বারোটার দিকে যখন লঞ্চটি উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসা হয় তখন ভেতরে কেবল লাশ আর লাশ দেখা যায়৷ ইতিমধ্যে ৩০ জন শিশু, নারী ও পুরুষের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে৷
এর আগে গতরাতে ৫ নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল৷ রোববার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর এলাকায় একটি কোস্টার জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে যায়।
লঞ্চে অর্ধশতাধিক যাত্রী ছিল৷ রাতেই ২৯ জন সাঁতরে তীরে ওঠেন৷ লঞ্চ ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে রাত থেকে কাজ করছে বিআইডব্লিউটিএ, কোস্টগার্ড, দমকল বাহিনী, নৌ ও থানা পুলিশের উদ্ধারকর্মীরা৷ রাতে উদ্ধারকর্মীরা ৫ নারীর লাশ উদ্ধার করেছে বলে জানান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক৷
লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে৷ নিহতরা হলেন: মুন্সিগঞ্জ সদরের উত্তর চরমসুরার ওয়ালিউল্লাহের স্ত্রী পাখিনা (৪৫), মুন্সিগঞ্জ সদরের প্রীতিময় শর্মার স্ত্রী প্রতিমা শর্মা (৫৩), মালপাড়ার হারাধন সাহার স্ত্রী সুনিতা সাহা (৪০) ও নোয়াগাঁও পূর্বপাড়ার দুখু মিয়ার মেয়ে ছাউদা আক্তার লতা (১৮)৷ রাতে উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি৷
সব মিলিয়ে ৩২ জন নিখোঁজ ছিলেন৷ এদিকে দুপুর সোয়া বারোটার দিকে ডুবে যাওয়া লঞ্চটি তীরে আনা হলে ভেতরে লাশ দেখা যায়৷ বিকেল পর্যন্ত এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৫টি নতুন লাশ উদ্ধার করা হয়েছে৷
গতকাল রাত ও আজ পর্যন্ত এ পর্যন্ত মোট ৩০টি লাশ উদ্ধার হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ নৌ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল আলম জানান, চরসৈয়দপুর এলাকায় শীতলক্ষ্যায় নির্মাণাধীন সেতুর কাছাকাছি স্থানে এ ঘটনা ঘটে। একটি কোস্টার জাহাজের ধাক্কায় এম এল সাবিত আল হাসান নামের লঞ্চটি ডুবে যায়৷ নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জের দিকে রওয়ানা হয়েছিল ডুবে যাওয়া লঞ্চটি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শীতলক্ষ্যা নদীর উপর নির্মাণাধীন তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর ১৬ নম্বর পিলারের নিরাপত্তকর্মী মোহাম্মদ হালিম৷ তিনি বলেন, এসকেএল-৩ (এম: ০১২৬৪৩) নামের একটি কোস্টার জাহাজ পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে অন্তত ২০০ মিটার লঞ্চটিকে টেনে নিয়ে যায়৷ এরপর লঞ্চটি যাত্রীসহ ডুবে যায়৷