ক্ষুদীরাম দাস-এর ছোট গল্প : বাবার ডায়েরী

অসময়ে অন্তরাকে ঘরের সামনে দেখে চম্পা চমকে গেলো।
ঘর থেকে বের হয়ে চম্পা বললো ঃ কী হয়েছে রে তোর? এই সময়ে আসছিস। তোকে তো বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছে।
অন্তরা ঃ তোর সাথে কথা আছে। চল, ভেতরে চল, তারপর বলছি।
চম্পা মনে মনে ভয় পেয়ে গেলো, হঠাৎ এমনভাবে বলছে যেন কোনো অঘটনই ঘটেছে।
অন্তরা ভেতরে ঢুকে ধপাস করে খাটের উপর বসে পড়লো। তারপর অন্তরা দরজাটা তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দিলো। এরপর জানালাটিও বন্ধ করে দিলো; যেন ভেতরে তারা কী কথা বলবে তা যেন কেউ না শুনতে পারে। এরপর অন্তরা আবার খাটের উপর বসে পড়লো। এদিকে চম্পা হা করে অন্তরার দিকে তাকিয়েই রয়েছে। সে কিছুই বুঝতে পারছিলো না। তবে এমন কোনো গোপন বিষয় রয়েছে, যা অন্তরা তাকে বলতে চায়। অবশ্য এজন্যে চম্পা প্রস্তুতই রয়েছে। চম্পার হঠাৎ মনে পড়েছে, এর আগে অন্তরা একদিন বলেছিলো, তার একটা ছেলেকে পছন্দ হয়েছে; এখন শুধু অপেক্ষায় আছে কখনো ছেলেটা তার জন্যে বড়শি পাতে। বড়শি পাতলেই অন্তরা গিলে খাবে। প্রেম আর ভালোবাসার ক্ষেত্রে সাধারণত ছেলেরাই প্রপোজ করে প্রথমে। মেয়েরা মনে মনে প্রত্যাশা করে শুধুমাত্র। মনের মাঝে উঁকি দেয় ভালোবাসা বিলিয়ে দেয়ার জন্যে। আশায় বুক বেঁধে থাকে, কিন্তু মুখে তারা কিছুই বলতে চায় না। সেজন্যেই হয়তো তারা বলে যে, মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না। চম্পা অবশ্য সে রকমই কিছু একটা আশা করেছিলো অন্তরার কাছ থেকে।
চম্পার ডান হাতটা টেনে বসালো খাটের উপর। আর অন্তরা চম্পার ঠিক পাশে গিয়ে গা ঘেঁষে বসলো। চম্পার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিস ফিস করে বললো ঃ তোকে একটা গোপন কথা বলতে চাই।
চম্পা ঃ বল তাড়াতাড়ি।
অন্তরা ঃ আরেকটু কাছে আয়।
চম্পা ঃ যদি পারতাম তো আমি তোর পেটেই ঢুকে যাই। বল, তুই কি বলতে চাস, তাড়াতাড়ি বলতো!
অন্তরা ঃ আমার বাবার প্রেমের কাহিনী আমি জানতে পেরেছি।
চম্পা ঃ কী বলছিস এসব, আশ্চর্য কথা তো। তুই কীভাবে জানলি এসব।
অন্তরা ব্যাগ থেকে একটা পুরনো ডায়েরী বের করে। তারপর বলে ঃ এই ডায়েরীতে সবকিছু রয়েছে। হঠাৎ গত পরশু আমি পুরোনো বইপত্র ঘাঁটতে গিয়ে এই ডায়েরীটা পেয়েছি। ধুলোবালি ঝারতে গিয়ে উদ্দেশ্যহীনভাবে ডায়েরীটা খুলেছি। দেখি, রঙিন হাতের লেখা। এমনি এমনি পড়তে লাগলাম। দেখলাম, প্রায় জায়গাতে আমার নাম রয়েছে।
চম্পা ঃ তোর নাম রয়েছে মানে?
অন্তরা ঃ মানে, আমার বাবার প্রেমিকার নামও অন্তরা।
চম্পা ঃ কী বলছিস এসব।
অন্তরা ঃ তবে আর কী বলছি। আমি সত্যি বলছি। তুই এই ডায়েরীটা পড়ে দেখ, তাহলে বুঝতে পারবি।
চম্পা ঃ ভেরী ইন্টারেস্টিং তো। কই দেখি তো ডায়েরীটা।
অন্তরা ঃ একটু অপেক্ষা কর। তোকে আমি দিচ্ছি। আগে শুন, তারপর আমি একের পর এক পাতা উল্টিয়ে পড়তে থাকি। কী মজাদার সব প্রেম কাহিনী। প্রত্যেকটি পাতায় শুধু বিরহ আর বিরহ। আর সে কী রোমান্টিক সব কথা। তবে ডায়েরীর শেষ পাতায় পড়ে যা বুঝলাম, মা বাবাকে দুঃখ দিতে পারবে না বলে নিজের প্রেম -ভালোবাসাকে বিসর্জন দিয়েছে। অর্থাৎ আমার বাবার প্রেমিকার নামও ছিলো অন্তরা। ডায়েরীর এক জায়গায় পড়েছি, বাবা তার প্রেমিকাকে বলেছে, যদি তার কোনো মেয়ে হয়, তাহলে তার নামও রাখবে অন্তরা।
চম্পা ঃ খুবই মজার বিষয় তো। তবে এ বিষয়ে তোর মা কিছু জানে কি না?
অন্তরা ঃ এ বিষয়ে তো আমি কিছু চিন্তাই করিনি ভাই। হয়তো জানে না।
চম্পা ঃ খুব সাবধান! কোনোভাবেই যেন তোর মায়ের হাতে এই ডায়েরীটা না পড়ে। তাহলে সমস্যা আছে।
অন্তরা ঃ কী সমস্যা?
চম্পা ঃ উনি খুব দুঃখ পাবে।
অন্তরা ঃ কেন দুঃখ পাবে।
চম্পা ঃ সহ্য করতে পারবে না।
অন্তরা ঃ ও বুঝতে পেরেছি। আরে না, কোনোভাবেই আমি আমার মাকে বলবোই না।
চম্পা ঃ জানতে পারলে কুরুক্ষেত্র বেধে যেতে পারে।
অন্তরা ঃ সাংঘাতিক বিষয় তো বলছিস। তাহলে এই ডায়েরীটা কী করবো এখন? কোথায় লুকাবো? মা জানতে পারলে তো সমস্যা হবে।
চম্পা ঃ আর তো বাবা জানলে-
অন্তরা ঃ আমি ডায়েরীটা পড়েছি জানলে হয়তো লজ্জা পাবে। আর না জানলে কিছুই হবে না।
চম্পা ঃ তাহলে একটা কাজ কর।
অন্তরা ঃ কী করবো?
চম্পা ঃ চুপি চুপি এই ডায়েরীটা আগের জায়গাতে রেখে দে। তাহলেই ঝামেলা মিটে গেলো।
অন্তরা ঃ সেটা সম্ভব নয়।
চম্পা ঃ কেনো?
অন্তরা ঃ মাকে নিয়ে ভয় আছে। মা যদি জানতে পারে তাহলে মহাসমস্যা হবে। মা হয়তো আত্মহত্যা করতে পারে।
চম্পা ঃ তাহলে ডায়েরীর রহস্যটা গোপন রাখা তোরই দায়িত্ব।
অন্তরা ঃ হুম!
চম্পা ঃ এখন তুই ডায়েরীটা আমার কাছে দিয়ে যা’। আমি লুকিয়ে রাখি। দুপুর বেলা তুই খাওয়া দাওয়া করে আমার সাথে বিশ্রম নিবি। আর আমরা একসাথে দু’জন মিলে ডায়েরীটা পড়বো। একেবারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বো।
অন্তরা ঃ হুম এটা অবশ্য ঠিকই বলেছিস!
চম্পা ঃ তাহলে ডায়েরীটা আমার কাছে দিয়ে যা’। আমি রেখে দিবো।
অন্তরা ঃ কোথায় রাখবি?
চম্পা ঃ আমার বই খাতার সাথে রেখে দিবো।
অন্তরা ঃ না না না। সেখানে রাখলে তোর মা বাবা জেনে যেতে পারে?
চম্পা ঃ আরে না। আমার মা বাবা আমার বই খাতায় হাত দেয় না।
অন্তরা ঃ যদি দেয়!
চম্পা ঃ হুম। যদি দেয় তাহলে তো সর্বনাশ হয়ে যাবে।
অন্তরা ঃ তাহলে কোথায় রাখবি?
চম্পা ঃ তুই চিন্তা করিস না-আমি একটা গোপন জায়গায় রেখে দিবো।
অন্তরা ঃ রেখে দে তাহলে, যেনো কেউ জানতে না পারে।
চম্পা ঃ আমার কিন্তু বিষয়টা খুবই ইন্টারেস্টিং লাগছে।
অন্তরা ঃ আমারও অবশ্য মজা লাগছে।
চম্পা ঃ আচ্ছা, তাহলে তুই এখন যা। বেশি সময় এভাবে দরজা জানালা বন্ধ রাখলে কেউ দেখে ফেলতে পারে।
অন্তরা ঃ হুম। আচ্ছা, ঠিক আছে। আমি তাহলে যাই রে।
অন্তরা দরজাটা খুলে স্বাভাবিকভাবে চলে গেলো। চম্পা নিজের ঘরের মধ্যে পায়চারি করছে। আর শুধু ঐ ডায়েরীর কথাটাই ভাবছে। মনে মনে বেশ পুলক অনুভব করছে। আকাশের সূযটা ঠিক মাথার উপর চলে এলো। গোসপালের সময় হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি পুকুরে গিয়ে চম্পা গোসল সেরে নিলো। তারপর অন্যান্য দিনের মতো দুপুরের খাবার শেষ করলো। যতোটা সম্ভব দুপুরের খাবার খেয়ে শেষ করে নিলো। এরপর অন্তরার অপেক্ষা না করেই বিছানায় চলে গেলো চম্পা। এদিক ওদিক তাকিয়ে দরজা জানালা বন্ধ করে ঐ ডায়েরীটা পড়া শুরু করে দিলো।
দুই পাতা পড়ার পরই অন্তরা দরজায় এসে নক করতে লাগলো। চম্পা ডায়েরীটা লুকিয়ে দরজাটা খুলে দিলো। দেখলো, অন্তরা দাঁড়িয়ে রয়েছে। অন্তরাকে ভেতরে নিলো। এরপর তারা দু’জন একসাথে শুয়ে শুয়ে ডায়েরীটা পড়তে লাগলো।
ডায়েরীর প্রত্যেকটি পাতায় প্রেমের কথা, ভালোবাসার কথা রয়েছে। ছন্দে ভরা প্রতিটি কথা তাদের হৃদয়টা খান খান করে দিচ্ছে আবেগে। ওরা দু’জন ভালোবাসার বাগানে ঘুরছে। রঙিন আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে ওদের মনটা। কখনো ছুটে যাচ্ছে নদীর তীরে। কেননা এই ডায়েরীটা জীবন্ত ও সত্য ভালোবাসায় পূর্ণ। হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা ডায়েরীর প্রত্যেকটি পাতায় পাতায় ফোটে উঠেছে। ওরা দু’জন পড়ছে, আর মুচকি হাসাহাসি করছে। কখনো কখনো ব্রæ কুচকে একে অপরের দিকে তাকিয়ে মুখ লুকিয়ে হাসাহাসি করছে। কখনো অদৃশ্য লাজে আর ভালোবাসার আবেগে দুই হাতে মুখ চেপে ধরে খিটখিটিয়ে হেসে মরছে। আবার দু’জন একসাথে পড়ে চলেছে। ওদের দু’জনেরই শরীরে শিহরণ সৃষ্টি হচ্ছে। আহা! সে কী প্রেম আর ভালোবাসার লুটোপুটি। একজায়গায় লেখা আছে, ‘তুমি থাকো পাতায় পাতায়, আর আমি থাকি ডালে ডালে।’ এই লেখাটা পড়েই ওরা দু’জন একে অপরকে জড়িয়ে ধরলো।
চম্পা বললো ঃ দেখ দেখ এখানে একটা চিঠিও রয়েছে, ‘ওগো আমার জীবন্ত নদী, অন্তরা, তোমাকে আমার ্এই অন্তরে চিরদিন বেধে রাখবো। তোমাকে ছাড়া আমি নিঃশ^াস নিতে পারি না। কারণ, তুমি আমার প্রতিটি নিঃশ^াস বেঁচে আছো। তাই তোমাকে আমি সবসময় ভাবি। তুমি আমার শয়নে স্বপনে। প্রতিদিন ভোরে আমি পাখির ডাকে খুঁজে পাই। বাগানের ফুলগুলো তোমার কথাই বলে। আর আমি তাদের সাথে কথা বলি। আমি খেতে বসলেও তোমার কথা মনে পড়ে। আমি ঘুমাতে গেলেও তোমার কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমাই। তখন তুমি আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দাও। আমি স্বপ্নে তোমাকে প্রতিদিন খুঁজে পাই। আমার খুব ইচ্ছে করছে, তোমার হাতে ভাত খেতে, আমার খুব ইচ্ছে করছে তুমি কবে আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিবে।
তুমি যখন হলুদ শাড়িটা সুন্দর কুচি দিয়ে পড়ে হাঁটতে থাকো, তখন আমি জানালা দিয়ে তোমার দিকে সেদিনও তাকিয়ে দেখেছি। বিশ^াস কর, সেদিন আমার খুবই ইচ্ছা করছিলো, যেন আমি তোমার পাশে হাঁটি। আমি জানি, তুমি আমার এসব পাগলামীতে খুবই হাসছো। আমারও খুব হাসি পাচ্ছে। থাক আর হাসতে হবে না–ইতি তোমার ময়না পাখি।’
এই লেখাটি পড়ে ওরা যে কতো সময় আনন্দে ভেসে উঠলো সেটা শুধু ওরাই জানে। তারপর একসময় অন্তরা ডায়েরীটা নিয়ে চলে এলো তাদের ঘরে। আনার সময় খুবই সাবধানতার সাথে নিলে আসলো, যেন কেউ না দেখতে পায়। ডায়েরীটা খাটের নিচে অন্যান্য বইয়ের সাথে অতি যতেœর সাথে রেখে দিলো।
পরের দিন সকালে অন্তরা ঘুম থেকে একটু দেরিতেই উঠলো। ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে ব্রাশ করতে করতে বারান্দায় আসলো অন্তরা। দেখলো, চম্পা তাদের ঘরের দিকেই আসছে। অন্তরাকে দেখে ভেতরে টেনে নিয়ে গেলো। তারপর চম্পা বললো ঃ তুই কিছু জানিস?
অন্তরা ঃ কী বিষয়ে?
চম্পা ঃ আংকেল আর আংটি তো সব জেনে গেছে?
অন্তরা ঃ কী বলিস এসব।
চম্পা ঃ আমি ঠিকই বলেছি।
অন্তরা চম্পার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে তার রুমে গিয়ে ঢুকলো। ভালোভাবে খুঁজে দেখছে যে, ডায়েরীটা সেখানে নেই, যেখানে সে লুকিয়ে রেখেছিলো। অন্তরার হাত পা ঠাÐা হয়ে আসছে। আবার চম্পার মুখের দিকে তাকালো হতবাক হয়ে।
অন্তরা ঃ আমি তো এখানেই রেখেছিলাম। আমার বেশ মনে আছে। ডায়েরীটা কোথায় গেলো?
চম্পা ঃ ওখানে পাবি না।
অন্তরা ঃ তার মানে?
চম্পা ঃ ওরা এখন আংটির হাতে।
অন্তরা ঃ আমার মায়ের হাতে। সর্বনাশ। এখন কী হবে রে ভাই।
চম্পা ঃ তোর মা বারান্দায় বসে বসে পড়ছে।
অন্তরা বেশ মন খারাপ করে খাটের উপর ধপাস করে বসে গেলো।
অন্তরা ঃ সর্বনাশ! এখন কী হবে গো।
চম্পা ঃ কিছুই হবে না।
অন্তরা ঃ মানে?
চম্পা ঃ মানে, তোর মা বাবা সবই জানে।
অন্তরা ঃ তারা কী জানে?
চম্পা ঃ সবই জানে। আমরা দু’জন যে ডায়েরীটা নিয়ে পড়েছি, সেটাও তারা জানে। কোনো চিন্তা করিস না, কোনো ভয় নেই।
অন্তরা ঃ তুই কী করে জানলি?
চম্পা ঃ আমাকে সবই বলেছে।
অন্তরা ঃ কখন বলেছে?
চম্পা ঃ সকালে।
অন্তরা ঃ তখন কী ওরা রেগে ছিলো?
চম্পা ঃ না, মোটেও না।
অন্তরা ঃ তার কোনো রাগ করেনি?
চম্পা ঃ না। কোনো রাগই করেনি। একেবারে স্বাভাবিকভাবে বলেছে। এখন ওরা দু’জনই বারান্দায় বসে বসে পড়ছে।
অন্তরা ঃ আমার কিন্তু ভয় হচ্ছে।
চম্পা ঃ কোনো ভয় নেই।
অন্তরা ঃ তুই একটু সামাল দিস তো। আমার খুবই ভয় হচ্ছে।
চম্পা ঃ আমি গিয়ে দেখে আসি।
অন্তরা ঃ যা’ দেখে আয়। তাদের অবস্থা বুঝে আয় তো।
চম্পা গিয়ে দেখে আসে। তারপর–
চম্পা ঃ ওরা দু’জন বাগানে ঘুরাঘুরি করছে।
অন্তরা আর চম্পা দু’জনে একসাথে হাঁটতে হাঁটতে বাগানের দিকে গেলো। ওদের দেখে অন্তরার বাবা ডাক দিলো। তারপর অন্তরার মা ডায়েরীটা বের করে অন্তরাকে দিয়ে বললো ঃ এই নাও। এটা ঘরে নিয়ে যাও।
অন্তরা হাত বাড়িয়ে ডায়েরীটা নেয়। মুহূর্তের মধ্যে অন্তরার মন থেকে ভয় চলে গেলো। এরপর বাবার দিকে তাকালে হাসিমুখে ডায়েরীটা নিয়ে যাবার জন্যে ইশারা দিলো। অন্তরার মন থেকে ভয় পাখিটা উড়ে চলে গেলো। অন্তরার বাবা ও মা একে অপরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।
অন্তরা বাবার কাছাকাছি গিয়ে বললো ঃ বাবা, তোমাকে একটা কথা বলবো?
অন্তরার বাবা ঃ হুম বলতে পারো?
অন্তরা ঃ আমার নামটা কে রেখেছে?
অন্তরার বাবা ঃ কেনো?
অন্তরার মা কথাটি শুনে হাসে। আর তার বাবার দিকে তাকিয়ে ইশারা দেয়।
অন্তরা ঃ মানে, এমনিতেই জিজ্ঞাসা করছি।
অন্তরার বাবা ঃ তোমার জন্মের আগে থেকেই এই নামটা ঠিক করা ছিলো। তোমার নামের অর্থ শুধু আমিই জানি।
অন্তরা ঃ সবাই বলে, তোমার দেয়া নামটা খুবই সুন্দর।
অন্তরার মা হাসতে হাসতে বললো ঃ আরে, বুঝতে পারোনি? তুমি তো জানই, তোমার মেয়ে তোমার ডায়েরীটা পড়েই তো এই প্রশ্নটা করলো।
বলেই অন্তরার মা বাবা হেসে দিলো।
অন্তরা ও চম্পা স্বলাজে খুটখুটিয়ে হাসতে হাসতে ওদের কাছ থেকে চলে গেলো।
———- সমাপ্ত————