এখনো বাবা রায়হানকে খুঁজে বেড়ায় শিশু আলফা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

সিলেট নগরের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে রায়হান আহমদ (৩৩) হত্যাকাণ্ডের এক বছর আজ সোমবার। তবে এক বছরেও বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন রায়হানের মা সালমা বেগম, স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি এবং পরিবারের সদস্যরা। একইসঙ্গে খুনিদের ফাঁসি দাবি করেছেন তারা।

রোববার (১০ অক্টোবর) বিকেলে নগরের চৌহাট্টাস্থ শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানান রায়হানের পরিবারের সদস্যরা। এ সময় রায়হানের স্ত্রী তান্নিকে তপ্ত রোদে দাঁড়িয়ে তাদের একমাত্র সন্তান আলফাকে (১৫ মাস) কোলে নিয়ে নীরবে চোখের জল ফেলতে দেখা যায়।

গত বছরের ১০ অক্টোবর দিনগত গভীর রাতে নগরের কাষ্টঘর এলাকা থেকে আখালিয়া এলাকার যুবক রায়হান আহমদকে ধরে নিয়ে যায় বন্দরবাজার ফাঁড়ির পুলিশ। পরে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয় পুলিশ হেফাজতে। ১১ অক্টোবর সকালে গুরুতর আহতাবস্থায় এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করে করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি একদিন পর বাদী হয়ে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে একটি হত্যা মামলা করেন। দেশে-বিদেশে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের সাত মাসের মাথায় গত ৫ মে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন এসআই (বরখাস্ত হওয়া) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান অভিযুক্ত করে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পিবিআই। মামলার প্রায় এক বছর পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর চার্জশিট (অভিযোগপত্র) গ্রহণ করেন আদালত। তবে এখনো শুরু হয়নি বিচারকাজ।

মামলার বিচারকাজ দ্রুত শুরু করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে রায়হানের পরিবার। মানববন্ধনে রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, একজন ছাড়া বাকি সব আসামিকে গ্রেফতার করায় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আমরা সন্তুষ্ট। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সুনজর আমাদের প্রতি আছে। এ কারণেই পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পলাতক আসামিকেও যেন দ্রুত গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, আসামিরা গ্রেফতার হলেও মামলার চার্জশিট দিতে অনেকে দেরি হয়েছে। এতে আমরা কিছুটা হতাশ। প্রয়োজনে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা হস্তান্তর করে মামলার বিচারকাজ দ্রুত শেষ করা হোক। আমরা আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

মানববন্ধনে উপস্থিত রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বলেন, আমার স্বামীর খুনিদের সবাইকে যেন দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হয়। আজ আমার ছোট মেয়েটা তার বাবাকে খোঁজে। কিন্তু সে জানে না তার বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আজ সে পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত।

মামলার কার্যক্রম সম্পর্কে রায়হান হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম এ ফজল চৌধুরী জানান, আদালত পিবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন। এখন বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে। বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পুলিশ হেফাজতে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্ত রিপোর্টে রায়হানের শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্নের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এ মামলায় অভিযুক্তরা হলেন-বন্দরবাজার ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভুঁইয়া, ফাঁড়ির টু-আইসি উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান উদ্দিন, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস, হারুনুর রশিদ ও ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ গায়েবকারী কথিত সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল নোমান। আসামিদের মধ্যে পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাগারে থাকলেও নোমান এখনো পলাতক।

আরো পড়ুন : শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

আরো পড়ুন : যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার

আরো পড়ুন : ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ

আরো পড়ুন : মেহ প্রমেহ ও প্রস্রাবে ক্ষয় রোগের কার্যকরী সমাধানসমূহ

আরো পড়ুন : গেজ, অশ্ব,পাইলসের সহজ চিকিৎসা

আরো পড়ুন : মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়ার হোমিও চিকিৎসা